চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে পৌরসভাস্থ ৩নং ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া এলাকায় স্বর্গীয় সম্ভুনাথ ঘোষের বাড়িতে, বাড়ির পূজারীবৃন্দের আয়োজনে আজ ১০ই এপ্রিল রোজ রবিবার চৈত্র মাসের শুল্কপক্ষের নব রাত্রির শুভলগ্নে জাঁকজমকভাবে শ্রী শ্রী বাসন্তী দেবীর পূজা উপলক্ষে নবমী পূজা, মা সিদ্ধিদাত্রী পূজা ও মহাযজ্ঞানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
জানা যায় যে, কালের নিয়মে মাতৃবন্দনা ও আরাধনা শ্রী শ্রী বাসন্তী দেবীর পূজোর প্রধান কার্যক্রম। দেশব্যাপী বহুকাল পূর্বে ধুমধাম করে উদযাপিত হতো দেবী বাসন্তী মায়ের পুজো। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় বাড়ির প্রাঙ্গণে আজ জাঁকজমকভাবে শ্রী শ্রী বাসন্তী দেবীর পূজা উপলক্ষে নবমী পূজা, মা সিদ্ধিদাতী পূজা ও মহাযজ্ঞানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। পূজোর আনন্দে পুরো এলাকা জুরে উৎসব মুখোর পরিবেশ বিরাজ করছে। “দর্শনে তৃপ্তি, ভক্তিতে মুক্তি”। তাই বাড়ীর প্রাঙ্গণে মাকে দর্শন ও ভক্তিভরে স্মরণ করার প্রয়াসে দীর্ঘ ৪দিন ধরে দূরআগত বহু ভক্তবৃন্দের সমাবেশ ঘটে। দৈনন্দিন পূজোর পরিক্রমা শেষে ভক্তবৃন্দের মাঝে চলছে মায়ের প্রসাদ বিতরণ। পূজোবাড়ীর প্রধান সড়ক ও প্রতিমা মন্ডপে রং বেরঙের আলোকসজ্জার কারুকাজ যেন মানুষের মনকে মোহিত করছে। পুরোহিত বা ব্রাহ্মনের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে আগামীকাল মায়ের দশমী পূজা শেষে প্রাথমিক ভাবে হাঁড়ির জলে মায়ের রূপ হিসেবে দর্পন বিসর্জন দেওয়া হবে। অতঃপর বাড়ীর পূজারীবৃন্দ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মধ্য রাতের শুভমুহূর্তে ধূপ, দ্বীপ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলণ ও ঢাকের তালে মন্ত্রউচ্চারণের মাধ্যমে দেবী বাসন্তী মা’কে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে।
চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই প্রকৃত দুর্গাপুজো বলে মনে করেন অনেকেই। এবার চৈত্র নবরাত্রি বা বাংলায় বাসন্তী পুজোর সূচনা থেকে সমাপ্তী পর্যন্ত দেবী বাসন্তী মায়ের উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মত। আগামীকাল ১১ এপ্রিল রোজ সোমবার দেবী বাসন্তী মায়ের বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ পূজোর সমাপ্তি ঘটবে।
বাড়ীর পূজারীবৃন্দরা বলেন, আজ মায়ের নবমী পূজা সম্পন্ন হলো, কাল মায়ের বিসর্জন। প্রতিবছরের ন্যায় আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের গঠিত নিয়ম পালন ও ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাসন্তী মায়ের পূজোর আয়োজন করে থাকি। আমরা আজই দেবী বাসন্তী মায়ের মুখে মলিনতার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছি। বিদায় বা বিসর্জন শব্দগুলো আমাদের হৃদয়ে বেদনার মত। এবছর বাসন্তী মায়ের পদতলে পুষ্পার্ঘ নিবেদনের মাধ্যমে আমরা যথাযথ নিয়মে আরাধনা ও পূজোর কার্যক্রম সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছি। মায়ের কাছে প্রতিবছরের ন্যায় আমরা সর্ব বিশ্বের শান্তি ও ভক্তবৃন্দের মনোবাসনা পূর্ণের জন্য মিনতি জানাই। আমরা মানুষ পূজাক্রমে ভুলত্রুটি হলে দেবী বাসন্তী মা যেন আমাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন এটাই প্রত্যাশা করছি। আমাদের এ পূজো শাস্ত্রমতে কালের পূজা বলে আক্ষায়িত। এবারের পূজোয় দূরআগত ভক্তবৃন্দের ভালোবাসায় আমরা সিক্ত।
আমাদের বাড়ীর পূজারীবৃন্দের আয়োজনে ভবিষ্যতে পূজোর এ রঙিণ আয়োজন অব্যাহত থাকবে।