চাঁদপুর সদর উপজেলার ১নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে যে আকস্মিক নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তা রোধ করতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির তাৎক্ষণিক নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ জরুরি প্রটেকশন কাজ শুরু করে।
জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দামোদরদী এলাকায় ঈদুল ফিতরের আগে ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন আকস্মিকভাবে দেখা দেয়। খবরটি পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় গিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ১০ মে রাতে ভাঙ্গন এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ১১ মে দিনেও পাউবো কর্মকর্তারা ভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে ডিজাইন করে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করেন। ১২ মে ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ দামোদরদী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হয়। পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, সেকশন অফিসার, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে এ ভাঙ্গন প্রতিরোধ কাজ শুরু হয়। পাউবো চাঁদপুরের সেকশন অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন এসব তথ্য জানান।
২০ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী ও পাউবোর সেকশন অফিসারসহ ভাঙ্গন এলাকায় যাওয়া হয়। সেখানে আরো ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম, চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ খান বাদল, সাবেক এমপি ফ্লাইট লেঃ এবি সিদ্দিক সাহেবের ছেলে জাবেদ সরকার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হকসহ আরো নেতৃবৃন্দ।
পাউবোর সেকশন অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, দামোদরদী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সংলগ্ন এলাকা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন রোধে ৫০ মিটার সতর্কতামূলক তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন চলমান আছে। এ কাজে মেঘনা ধনাগোদা বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট সাপ্লাই) ৮০ কেজি ওজনের ৭২০০ জিওব্যাগ এবং ১৭৫ কেজি ওজনের ৩২০০ জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ১২ মে কিছু ব্যাগ ফেলে তাৎক্ষণিক ভাঙ্গন রোধ করা হয়। এরপর ঈদের ছুটিতে বালু মহাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কদিন ডাম্পিং কাজ বন্ধ ছিলো। আজ ২১ মে শুক্রবার থেকে পুরোদমে কাজ চলবে। সেকশন অফিসার আরো জানান, শুধু দামোদরদী এলাকায়ই নয়, বিষ্ণুপুর খেয়াঘাট এবং তৎসংলগ্ন এলাকা ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন রোধে ৩০ মিটার সতর্কতামূলক তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ এই সাথে চলমান আছে। এ কাজে মেঘনা ধনাগোদা পওর বিভাগ, পাউবো চাঁদপুর হতে ৮০ কেজি ওজনের ৪৩২০ জিওব্যাগ এবং ১৭৫ কেজি ওজনের ১৯২০টি জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। মোট ১৬ হাজার ৬শ’৪০টি জিওব্যাগ বিষ্ণুপুরে ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে ডাম্পিং করা হচ্ছে।
এ ভাঙ্গন বিষয়ে সেকশন অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ৭ বছরে এ এলাকায় ৭০ ফুট এলাকা ভেঙ্গেছে। এই চিত্র অন্যান্য এলাকার ভাঙ্গনের চিত্র থেকে খুবই কম। তাছাড়া এখানে কখনো ভাঙ্গন অব্যাহত ছিলো না। হঠাৎ করে কিছু অংশ করে ভাঙ্গে। যেখানে ভাঙ্গন দেখা দেয় সেখানেই আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই।