চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল দু’ মাস জাটকা রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় চাঁদপুর অভয়াশ্রম এলাকা থেকে জব্দকৃত শতাধিক জেলে নৌকার মালিকানা শনাক্ত না হওয়ায় ইঞ্জিনসহ রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নৌকাগুলো। এসব নৌকাগুলোর মূল্য বাজার দরে কোটি টাকারও বেশি। জেলা টাস্কফোর্স তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রায় ১ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবী নেতারা।
৩০ মে রোববার বিকালে চাঁদপুর নৌ-থানা ও লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশের জেটির পাশে দেখা গেছে, শতাধিক ছোট-বড় জেলে নৌকা। যেগুলোর মধ্যে কোনো কোনো নৌকায় একাধিক ইঞ্জিন রয়েছে। বড় নৌকাগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য আড়াই লাখ টাকা করে। একদম ছোট সাইজের ইঞ্জিন চালিত নৌকার দাম ৫০ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে জব্দৃকত ৪০-৫০টি বড় নৌকার মূল্য প্রায় কোটি টাকা।
চাঁদপুর সদরের জেলে নেতা তসলিম বেপারী বলেন, অভিযান চলাকালীন সময়ে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলেছি, নৌকাগুলো তাৎক্ষনিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য, কিন্তু তা আর হয়নি। যার কারনে কোটি টাকা মূল্যের জেলে নৌকাগুলো নষ্ট হচ্ছে। কারণ, নৌকাগুলোর মালিক শনাক্ত ছাড়া জরিমানা কিংবা ছাড় দেয়া হয় না। এসব নৌকা জব্দের সময় মামলা করে জব্দ তালিকা করা হয়। বর্তমানে এসব নৌকা চাঁদপুর নৌ-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জাটকা সংরক্ষণের দু’ মাস (মার্চ-এপ্রিল) শুধুমাত্র হাইমচর উপজেলায় অভিযানকালে ২৮টি জেলে নৌকা জব্দ হয়। সেগুলো মৎস্য আইনের বিধান অনুযায়ী উপজেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১১ লাখ ৪১ হাজার ৮শ’ ৫ টাকা তাৎক্ষনিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়। এসব টাকা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা শেষে সরকারি কোষাঘারে জমা করেন হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে, অভয়াশ্রম এলাকার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলায় একই নিয়মে জব্দকৃত জেলে নৌকা টেন্ডারে বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও বিক্রি হয়নি। যার কারণে জেলেদের জব্দকৃত নৌকাগুলো যেখানেই আছে, সেখানে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি বলেন, জব্দকৃত নৌকাগুলো তাৎক্ষনিক টেন্ডারে বিক্রি হয়নি। তবে এখনো অনেকে নৌকার মালিক জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। মালিক শনাক্ত না হলে এসব নৌকা টেন্ডারে বিক্রি হবে।