কচুয়া উপজেলার বুধুন্ডা গ্রামে মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদে এক অসহায় যুবতীকে অমানবিক ভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই যুবতীর মারধরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় চরম ক্ষোভ এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কচুয়া থানা পুলিশ ৩জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটকৃতরা হলেন, একই গ্রামের অভিযুক্ত শাহজালাল হোসেন, সফিকুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান। অন্যদিকে যুবতী ইয়াসমিনকে মারধরের ঘটনায় বুধবার দুপুরে ৪জনের নাম উল্লেখ ও ৩জনকে অজ্ঞাত আসামী করে তার মা পারভীন বেগম কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-২১,তারিখ: ২৮.০৭.২০২১ খ্রি:
সরেজমিনে হামলার শিকার পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বুধুন্ডা গ্রামের আমানিয়া প্রধানীয়া বাড়ির অধিবাসী মৃত. ছিফায়েত উল্যাহ’র মেয়ে লিপি আক্তার সুমির মোবাইল মঙ্গলবার দুপুরে চুরি হলে একই বাড়ির ইলিয়াস মিয়ার কন্যা ইয়াসমিন আক্তারকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে ইয়াসমিন আক্তার মোবাইল চুরির বিষয়টি অস্বীকার করলে এক পর্যায়ে ইয়াসমিনের ঘর থেকে মোবাইল উদ্ধার হয় । এ নিয়ে লিপি আক্তার সুমির শ^শুর সফিকুল ইসলাম,ভাসুর শাহজালাল ও ভাই মেহেদী হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে ইয়াসমিনকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করেন। পরে নির্যাতনের শিকার অসহায় যুবতী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং ওই ভিডিওটি বেশ কয়েকটি যুবকের মোবাইলে পোস্ট দিলে ভাইরাল হয়।
মারধরের শিকার ইয়াসমিন আক্তার জানান, মোবাইল চুরির অপবাদে আমাকে প্রতিপক্ষরা মারধর করে মাথায় চুল কাটার চেষ্টা করে এবং মাথার চুলে আলকাতরা লাগিয়ে দেয়। কিন্তু আমি মোবাইল চুরির সাথে জড়িত নই। মিথ্যা অপবাদে আমাকে মারধর করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এলাকার ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে নবীর হোসেন আমাকে বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন ও মারধরের চেষ্টা করে।
ইয়াসমিনের মা পারভীন বেগম বলেন, আমি বাতাপুকুরিয়া মর্নাক কোল্ড স্টোরেজে কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাই। আমার মেয়েকে মোবাইল চুরির অপবাদে প্রতিপক্ষ লোকজন মারধর করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু আমার মেয়ে চুরির সাথে জড়িত নয়। তিনি আরো বলেন, আমি ন্যায় বিচারের জন্য মামলা করেছি। কিন্তু প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় কিছু লোকজনের ইন্দনে বর্তমানে আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
মোবাইলের মালিক লিপি আক্তার সুমি জানান, আমি টিউবওয়েলে গোসল করে ভুলে মোবাইল ফেলে চলে গেলে, একই বাড়ির ইয়াসমিন আমার মোবাইল চুরি করে পরে অস্বীকার করলেও তার ঘর থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। ইয়াসমিনকে মারধর কিংবা চুল কাটা হয়নি। তবে চুলে একটু আলকাতরা দেয়া হয়েছে।
কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন জানান, চুরির অপবাদে যুবতীতে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে এবং ভিকটিমের মা মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের মধ্যে ৩জনকে আটক করা হয় এবং আটককৃতদের চাঁদপুরের জেলহাজাতে প্রেরন করা হয়েছে।