চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ দীপু মনির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান। চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের অভ্যন্তরে সম্পূর্ণ নতুন করে বসানো ৬ হাজার মিঃলিঃ লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট থেকে পরীক্ষামূলক অক্সিজেন সরবরাহ চালু করা হয়েছে। সরবরাহে কোনো প্রকার ত্রæটি না হলে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে পুরো হাসপাতাল অক্সিজেনের আওতায় চলে আসবে।
৬ হাজার মিঃ লিঃ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অক্সিজেন সিলিন্ডারটিতে ২ আগস্ট সোমবা রাত সাড়ে ৮টায় ৩ হাজার মিঃলিঃ লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ করে পরীক্ষামূলক চালু করা হয়। এটি চালু হওয়ায় চিকিৎসাসেবায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল তথা চাঁদপুর জেলাবাসীর জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
এ অক্সিজেন প্লান্ট থেকে জেলার চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের কয়েকটি জেলায়ও অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। আইসিইউ এবং করোনা রোগীদের অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়াসহ পুরো হাসপাতালটি এখন সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের আওতায় চলে এসেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন যাবৎ কুমিল্লা থেকে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করে আসায় অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হতো। চাঁদপুরে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ শুরু হলে, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অক্সিজেন সংকটের বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ দীপু মনিকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রæত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেন।
হাসপাতালটির অক্সিজেন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ডাঃ দীপু মনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে হাসপাতালে স্থায়ীভাবে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেন। নির্মাণাধীন অক্সিজেন প্লান্ট এর ধারণক্ষমতা ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটার।
ট্যাঙ্কটি বসানোর কাজে অর্থায়ন করছে ইউনাইটেড ন্যাশন ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ইমার্জেন্সি ফান্ড (ইউনিসেফ) এবং বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী কামাল হোসেন জানান, ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটারের ধারণ ক্ষমতার লিকুইড অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বসানোর অবকাঠামো এটি।
মূল প্লান্টটি হচ্ছে ৬ হাজার লিটারের, এটি যখন অক্সিজেনে রূপান্তর হয় তখন ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটারে রূপান্তর হবে। পরীক্ষামূলক অক্সিজেন সরবরাহ চালুর বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, অক্সিজেন প্ল্যানটি পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দু-একদিনের মধ্যে জরুরি বিভাগসহ পুরো হাসপাতালটি অক্সিজেন সেবার আওতায় চলে আসবে এবং অক্সিজেন সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে।
হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল এ বিষয়ে জানান, সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যানটি চালু হওয়ায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল তথা চাঁদপুর জেলাবাসী চিকিৎসাসেবায় নতুন এক অধ্যায় প্রবেশ করলো। এটি সম্ভব হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে। লিকুইড প্লানটি পুরোপুরি চালু হলে আমাদের জেলার বর্তমান চাহিদা পূরণ করে ৪-৫ মাসের অক্সিজেন মওজুদ থাকবে। এছাড়াও এখান থেকে অন্য জেলায় অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, করোনা পরিস্থিতি ১ম ধাপের শুরুতে চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্তদের অক্সিজেনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করলে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযোজনের ব্যবস্থার পাশাপাশি স্থায়ীভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার স্থাপনের ব্যবস্থা করে দেন এবং করোনায় আক্রান্ত রোগীদের প্রথমে ২৫ বেড পরবর্তীতে ৩০ বেডের আইসোলেশন বিভাগের ব্যবস্থা করেন।
উল্লেখ্য, করোনা শনাক্তকরণের জন্যে নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষামন্ত্রী এবং তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাধ্যমে চাঁদপুরে স্থাপন করেন কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষাগার (আরটিপিসিআর ল্যাব)। এ ল্যাব চালু হওয়ার পর খুব দ্রæত সময়ে করোনা টেস্টের রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও তিনি ৩টি আইসিইউও বেড অনুমোদনের ব্যবস্থা করেন। সর্বশেষ অক্সিজেন প্লানটি স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল পিক চিকিৎসাসেবায় আরো বহুগুণ এগিয়ে গেল।