ফরিদগঞ্জে ক্ষমতা দাপট দেখিয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক কাউসার আলম কামরুল অসহায়ের উপর পর পর হামলা করে গুরত্বর আহত করেছে একই বাড়ির রুবেল, স্ত্রী তাসলিমা আক্তার ও দু বছরের শিশুকন্যা রুইপাকে।
১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলার রুপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রুপসা গ্রামের মসজিদের পাশে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ কেমন ক্ষমতার ব্যবহার এমন প্রশ্ন সাধারন মানুষের মাঝে।
সরজমিনে গিয়ে ও মামলার এজহারে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০ টায় একই বাড়ির রুবেল যাওয়ার পথে বাঁধা দেয় কামরুল। এ সময় উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। ঘটনার একপর্যায়ে কামরুলসহ কয়েজন মিলে রুবেলকে বেধড়ম মারধর করে। রুবেলের ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে সেখানেও তাদের সাথে কামরুলের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে কামরুল বাড়িতে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন কামরুলের বাড়িতে গেলে সে কাউকে কর্ণপাত না করে ক্ষমতা দাপট দেখায় এবং মামলার হুমকি দেয়।
পরের দিন ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অশ্র দিয়ে রুবেলকে কুপিয়ে গুরত্বর আহত করে কামরুল ও তার সহযোগিরা। এ সময় রুবেলের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে গুরত্বর আহত অবস্থায় রুবেলকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় রুবেলের পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে ১৭ এপ্রিল উভয় পক্ষ থানায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ দায়ের করে।
এ বিষয়ে রুবেলের বাবা আমির হোসেন বলেন, আমার ছেলে রুবেল হানিয়া রোগের অপারেশন করা এবং হার্টে সমস্যা নিয়ে চলাফেরা করে। কিন্তু কামরুল ও তার সহযোগীরা আমার ছেলেকে এভাবে বেদম মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি, পরের দিন আবারো কুপিয়ে মাথায় ও পিঠে মারাত্মকভাবে জখম করে।
‘স্থানীয় বাসিন্দা মর্জিনা বেগম জানান, আমি নামাজ পড়ে ঘর থেকে বের হয়ে শুনি কার যেনো চিৎকার শোনা যাচ্ছে। আমি দৌঁড়ে গিয়ে দেখি কামরুলসহ কয়েকজন মিলে রুবেলকে মারধর করছে। আমি তাদেরকে বাঁধা দিলে তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং রুবেলকে মারতে থাকে। এ সময় রুবেলের স্ত্রী রুবেলের মেয়েকে কোলে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কামরুলকে বাঁধা দিলে কামরুল রুবেলের ২ বছরের ছোট মেয়েটাকে লাথি মেরে তার থুতনি ফাটিয়ে ফেলে এবং আমি চিৎকার করলে মসজিদের কিছু মানুষ আসলে তারা বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার সময় আমাদের হুমকি দিয়ে যায় কামরুল।
এ বিষয়ে অভিযোগের বাদী রুবেলের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। আমার স্বামী রুবেল গাছের কাজ করে। কামরুলদের সাথে আমার শ^শুরদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। আমরা গরীব বলে কামরুলরা প্রায়ই আমাদের হুমকি দেয়, আমাদের মারধর করবে। সে নাকি অনেক বড় নেতা, তার হাত নাকি অনেক বড়। তার অনেক টাকা আছে। আমার স্বামীর কিছু হলে আমরা কী করে চলবো? আমরা তার বিচার চাই।
এদিকে ঐ এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কামরুল-রুবেলকে মারধরের পরে সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করে মানুষের আবেগ নিয়ে খেলার চেষ্টা করে যাহ সম্পূর্ণ নাটক।
অন্যদিকে রুবেলের উপর হামলা করে কামরুল থানায় মিথ্যা মামলা করে পুলিশ দিয়ে রুবেলের পরিবারকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন রুবেলে পরিবার ও স্থানীয়রা।
হামলার বিষয়ে কামরুল বলেন, আপনাদের যা মন চায় লেখেন। আমার কিছু যায় আসে না। আপনারা সবাই আমাকে চিনেন না, আমি কে?
এ বিষরেয় ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, আমরা উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।