খুব শীঘ্রই চাঁদপুর-লাকসাম ও চট্টগ্রামের মধ্যে নতুন আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনসহ দু’টি ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে। এ পথে নতুন ট্রেন চালু করার পূর্বে চাঁদপুর-লাকসামের ৫৪ কিলোমিটার ও লাকসাম-চট্টগ্রামের মেইল লাইনের মধ্যে চলাচলকারী রেলপথে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ম্যানেজার সামস্ আরেফিন তুষার (ডিআরএম) এ’নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত ৯০ টন ওজনের শক্তিশালী একটি দ্রুতগতির নতুন ইঞ্জিন ট্রেন নিয়ে আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগির ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে।
ইতিপূর্বে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন চালুর জন্য চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের সাথে বেশ ক’বার আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি করেন। ডাঃ দীপু মনি এমপি শুধু নতুন ট্রেন চালু নয়, পাশাপাশি লাকসাম থেকে চাঁদপুর বড় স্টেশন পর্যন্ত রেল লাইন সংস্কার ও নতুন করে সকল স্টেশনগুলো সংস্কার করার উপরও গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তারই যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে লাকসাম থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত রেল লাইন সংস্কার ও বেশির ভাগ রেলওয়ে স্টেশনগুলো সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এ ট্রেন চালু হলে যাত্রীদের পূর্বের সময় থেকে এক ঘন্টা সময় কম লাগবে প্রতিদিন যাতায়তে। এ পথে বর্তমানে চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে একটি মেঘনা এক্সপ্রেস চলাচল করলেও আগামী মাস থেকে আধুনিক বগিসহ নতুন ইঞ্জিনের মাধ্যমে দু’টি মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন ও এখন চলাচল করছে যে একটি সাগরিকা এক্সপ্রেস সেটি নতুন আধুনিক বগিসহ নতুন ইঞ্জিনের মাধ্যমে সাগরিকা এক্সপ্রেস এ পথে চলাচল করবে।
রেলওয়ে বিভাগ থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, সারাদেশে মিটার গেজে চলাচলের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে কোরিয়া থেকে ৪০টি ইঞ্জিন আনা হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুরে ১টি ইঞ্জিন ট্রায়ালের জন্য এসেছে। বিগত সময় এ পথে চলাচলকারী অন্যান্য ইঞ্জিনের চেয়ে এটি অনেক লম্বা ও উচ্চতায় বেশি এবং এ নতুন ইঞ্জিনটির ওজন রয়েছে ৯০ টন।
২৬ জানুয়ারি বুধবার এ প্রতিনিধি দল সকালে চট্টগ্রাম থেকে নতুন ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিনসহ ৪টি নতুন আধুনিক ট্রেনের বগিসহ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে চাঁদপুর এসে পৌঁছায় দুপুর দেড়টায়। এ ট্রেনটি পুনরায় একই দিন সন্ধ্যার পর চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে চাঁদপুর ত্যাগ করে।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) চট্টগ্রাম শামস আরফিন তুষার, বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ আবু হানিফ, কোরিয়া থেকে আগত প্রকৌশলী, বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী, চট্রগ্রাম রেলওয়ে বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী ওহিদুর রহমান, বিভাগীয় সিগন্যাল এন্ড টেলিকম প্রকৌশলী তন্ময় পাটওয়ারী, আরএনবি কমান্ডেন্ট শফিকুর রহমান, উপ-সহাকারী প্রকৌশলী-কুমিল্লা মুরছালিন রহমান, উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার ও এসএসএই সিগনাল লাকসাম মহসিন মল্লিক প্রমুখ।
স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোহেবুল শিকদার, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুবুর রহমান, রেলওয়ে শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওহিদুর রহমান ও শ্রমিকলীগ নেতা ইউনুছ পাটওয়ারী জুয়েল।
চাঁদপুরে এসে এ প্রতিনিধি দল চাঁদপুরের মিটারগেজের এ রেলপথে নতুন ইঞ্জিনটি এ পথে চলাচলের উপযুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখেন। তারা দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রেলপথ ও নতুন ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিনসহ ট্রেনটি এ পথে চলাচলের উপযোগী কিনা তা নিয়ে ব্যাপক পর্যবেক্ষন ও পর্যালোচনা করে দেখেন। পরে তারা পর্যবেক্ষন ও পর্যালোচনা শেষে চাঁদপুর অফিসার্স রেস্ট হাউজে মতবিনিময় এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয় অবহিত করেন।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) সামস্ আরেফিন তুষারসহ অন্যান্যা কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী আমরা চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশ করবো। এরপর অচিরেই এ পথে নতুন ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিনসহ ১৬টি আধুনিক মডেলের নতুন বগিসহ দ্রæতগতির নতুন সাদা ও সবুজ রংয়ের ট্রেন এ পথে চলাচল শুরু করবে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে বর্তমানে একটি মেঘনা এক্রপ্রেস ট্রেন ৬০ টন ওজনের ইঞ্জিন দিয়ে নিয়মিত চলাচল করলেও নতুন ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিন নিয়ে অচিরেই মেঘনা এক্সপ্রেস-২ নামে আরেকটি ট্রেন অনুমতি ক্রমে চালু করা হবে। নতুন করে মেঘনা এক্সপ্রেস-২, ট্রেনটি চলাচলের সকল অফিসিয়াল কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু ট্রেনটি চালুর অপেক্ষায় রয়েছে।